সাধারণ সম্পাদক কাদের?


এম সুজন আকন | সোনালীনিউজ ডটকম, প্রকাশিত: ২১ অক্টোবর ২০১৬


ঢাকা: যেকোনো রাজনৈতিক দলের সাধারণ সম্পাদকের পদটি অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। বলা যায় পুরো সংগঠনের চালিকা শক্তি। অর্থাৎ সাধারণ সম্পাদক দলের অপারেশনাল কমান্ডার। তাই এ পদে অদক্ষ বা অবিচক্ষণ নেতাকে বসালে দলের ভাবমূর্তি প্রশ্নের মুখে পড়তে বাধ্য।

আর সেই রাজনৈতিক দলটি যদি হয় দেশের অন্যতম প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী তাহলে তো আর কথাই নেই। এ পদটি নিয়ে অবশ্যই তুমুল হৈ চৈ আর কৌতুহল ছড়িয়ে পড়বে। সেই স্বাভাবিক।

আগামীকাল শনিবার (২২ অক্টোবর) রাজধানীতে ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ‌্যানে (সেই রেসকোর্স ময়দান) দেশের অন্যতম সুপ্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী দল আওয়ামী লীগের ২০তম জাতীয় সম্মেলন। এ সম্মেলনেই ঘোষণা করা হবে এবারের সবচেয়ে বৃহৎ আর জৌলুসপূর্ণ কমিটি। তবে সব ছাপিয়ে দলের সাধারণ সম্পাদক পদ নিয়েই চলছে তুমুল আলোচনা। সামাজিক যোগাযোগ মধ্যমেও ঝড় উঠেছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নেতারা বলছেন, এবারের কাউন্সিলের দলের সাধারণ সম্পাদক পদে পরিবর্তন আসছে। দলের সবচেয়ে আলোচিত, সুদক্ষ আর যোগ্যতম নেতাকে এ দায়িত্ব দেয়া হচ্ছে।

ঘটনার শুরু গত বুধবার (১৯ অক্টোবর) বিকেলে আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকের পর থেকেই। ওই বৈঠকে দলের নতুন ঘোষণাপত্র ও গঠনতন্ত্রের খসড়া অনুমোদন করেন দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা। বৈঠক চলে রাত ১০টা অবধি। তবে তার আগে দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের দলীয় প্রধানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এরপর থেকেই সাধারণ সম্পাদক পদে পরিবর্তনের গুঞ্জন শুরু হয়।

এদিকে ওবায়দুল কাদেরের কয়েকজন উৎসাহী সমর্থক ফেসবুকে তাকে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আগাম অভিনন্দন জানাতে শুরু করেন। প্রধানমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরকে সবুজ সংকেত দিয়েছেন বলে দাবি করেন।

নোয়াখালীর সন্তান ওবায়দুল কাদের কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি পদে দায়িত্ব পালন করেন। পরে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের পদ লাভ করেন। সর্বশেষ তিনি সভাপতিমণ্ডলীর সারিতে ওঠেন। এর মধ্যে ২০১২ সালে দলের জাতীয় সম্মেলনের আগেও তিনি সাধারণ সম্পাদক পদ পাচ্ছেন বলে গুঞ্জন ওঠে।

সাধারণ সম্পাদক হওয়ার সম্ভাবনার বিষয়ে ওবায়দুল কাদের গণমাধ্যমকে জানান, নেত্রী তাকে প্রস্তুতি নিতে বলেছেন। কাউন্সিলরদের অনুমোদন সাপেক্ষে সম্মেলনের দিনই বাকিটা ঠিক হবে বলে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘চাঁদ উঠলে সবাই দেখবে।’ একাধিক শীর্ষ নেতা জানিয়েছেন, দলীয় প্রধানের সঙ্গে সাক্ষাতের পর থেকে ওবায়দুল কাদেরের মধ্যে উচ্ছ্বাস দেখা গেছে।

বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহচর সৈয়দ নজরুল ইসলামের ছেলে সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম ২০০৭ সালে জরুরি অবস্থা জারির পর শেখ হাসিনার বন্দি হওয়া ও প্রভাবশালী কয়েকজন নেতার উল্টোযাত্রার মধ্যে সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব নিয়েছিলেন। বিরূপ পরিস্থিতি সামাল দিয়ে তিনি দলীয় প্রধানের পূর্ণ আস্থা অর্জনও করেছিলেন। এরপর ২০০৯ সালে সরকার গঠনের পর সৈয়দ আশরাফকে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেয়া হয়। ২০১৪ সালে নির্বাচনের পরও একই দপ্তরেই থাকেন তিনি। সাত বছর ধরে গুরুত্বপূর্ণ ওই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকার মধ্যে হঠাৎ করেই তার নিয়মিত সময় না দেয়ার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা সমালোচনা শুরু হয়।

এর মধ‌্যে গেল বছর (২০১৫ সাল) আকস্মিকভাবে সৈয়দ আশরাফকে দপ্তরবিহীন করেন প্রধানমন্ত্রী। এ নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গণে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় ওঠে। সপ্তাহ খানেকের মধ্যেই তাকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেয়া হয়। বর্তমানে তিনি এ দায়িত্বেই আছেন। 

মন্তব্যসমূহ